Header ads

দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম ২০২৪? দাউদের সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া ঔষধ?

দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম ২০২৪? দাউদের সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া ঔষধ?

কখনো কি এমন হয়েছে, তীব্র চুলকানির কারণে নিজেকে অসহায় মনে হয়েছে? ত্বকের এই যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা, যা আমরা দাদ বা দাউদ নামে চিনি। মানসিক অস্বস্তিও তৈরি করতে পারে। দাউদ কেন হয় বা দাউদ কি কারণে হয় এই প্রশ্নগুলো প্রায়ই আমাদের মাথায় আসে। এটি সাধারণত ফাঙ্গাসের সংক্রমণ থেকে হয় এবং ত্বকের একটি অংশ সংক্রমিত হলে, তীব্র চুলকানি ও যন্ত্রণার কারণে একজন মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে অস্বস্তিতে পড়ে যায়। 

এই সমস্যার সমাধানে অনেকেই দাউদ দূর করার ঘরোয়া উপায় খোঁজেন, যা প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে ত্বককে নিরাময় করতে সহায়ক হতে পারে। তবে, কার্যকরভাবে ত্বক থেকে দাউদ দূর করার উপায় জানতে, একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বাজারে বিভিন্ন দাদ চুলকানি দূর করার ক্রিম পাওয়া যায়।  দাউদের মলম এবং এন্টিবায়োটিক এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য হতে পারে।

বাংলাদেশে দাউদের চিকিৎসা পাওয়া সহজ এবং বিশেষজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্টরা সাধারণত এন্টিফাঙ্গাল মলম ও ট্যাবলেট দিয়ে চিকিৎসা করেন। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, সঠিক চিকিৎসা ও পরিচর্যার দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

এভাবে দাদ বা দাউদ নিয়ে সচেতন থাকা এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা একজন মানুষের জন্য স্বস্তির কারণ হতে পারে।

দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম ২০২৪ দাউদের সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া ঔষধ


দাদ বা দাউদ কেন হয়?

দাদ বা দাউদ, যা মূলত 'টিনিয়া' নামে পরিচিত, একটি ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমণ। এই ফাঙ্গাস আর্দ্র, উষ্ণ এবং ভেজা পরিবেশে দ্রুত ছড়ায়। অতিরিক্ত ঘাম, অপরিচ্ছন্নতা এবং অন্যের ব্যবহৃত জামাকাপড় বা তোয়ালে ব্যবহার করলে এই সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর্দ্র ত্বকে ছত্রাক সহজে জন্ম নেয়, আর অপরিষ্কার অবস্থায় তা দ্রুত ছড়ায়। এছাড়া, শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলেও সংক্রমণ সহজে হতে পারে। পরিচ্ছন্নতা এবং যত্নই এই সমস্যার মূল প্রতিকার।

দাদ বা দাউদ দূর করার উপায়:

ত্বক থেকে দাউদ দূর করতে চাইলে, প্রথমেই কিছু সচেতনতা ও যত্নের প্রয়োজন। এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে যা করতে পারেন:

ত্বক শুষ্ক রাখা:

প্রতিবার গোসলের পর ত্বক ভালোভাবে শুকিয়ে নিন, বিশেষ করে শরীরের ভাঁজযুক্ত স্থানগুলো। আর্দ্র ত্বক দাউদ ছড়ানোর অন্যতম কারণ।

পোশাক পরিবর্তন:

ঘাম হলে সঙ্গে সঙ্গে পোশাক পরিবর্তন করুন। শুকনো ও পরিষ্কার পোশাক দাউদের ঝুঁকি কমায়। নিজস্ব তোয়ালে ও জামাকাপড় ব্যবহার করুন। অপরের ব্যবহৃত জিনিস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ:

দাউদ দূর করার জন্য প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিফাঙ্গাল মলম বা ওষুধ ব্যবহার করুন। এটি সংক্রমণ দ্রুত নিরাময়ে সহায়ক।

পরিচ্ছন্নতা আর যত্নের এই ছোট ছোট অভ্যাস দাউদের মতো সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়ার মূল চাবিকাঠি।

দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম:

অনেকেই দাউদ বা দাদ চুলকানি দূর করার ক্রিম খোজেন। আবার অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম এর নাম কি? দাউদের মতো ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশনের চিকিৎসায় বিভিন্ন সক্রিয় উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা মলমগুলো অত্যন্ত কার্যকরী। এই মলমগুলোর মধ্যে ক্লোট্রিনাজল (Clotrimazole), মিকোনাজল (Miconazole), এবং টারবিনাফাইন (Terbinafine) অন্যতম প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এগুলো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অধীনে বাজারে পাওয়া যায় এবং প্রতিটিরই রয়েছে নির্দিষ্ট কার্যকারিতা। নিচে দাউদের জন্য ব্যবহৃত কয়েকটি সাধারণ ও জনপ্রিয় ফাঙ্গাল ইনফেকশন মলম এবং তাদের মূল্য উল্লেখ করা হলো:

1. ক্যানেস্টেন ( Canesten) - 1% ক্লোট্রিমাজল।
   ক্যানেস্টেন হলো ক্লোট্রিমাজল সমৃদ্ধ একটি মলম, যা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী। এটি ত্বকে দাউদ বা অন্যান্য ফাঙ্গাল ইনফেকশনের দ্রুত আরাম দিতে সহায়ক।  
   -মুল্য: ১০-২০ গ্রাম টিউবের জন্য আনুমানিক ১৫০-২৫০ টাকা।

2. ড্যাকটরিন (Daktarin) - 2% মিকোনাজল।
   মিকোনাজল সমৃদ্ধ ড্যাকটরিন মলমটি ফাঙ্গাল ইনফেকশনের চিকিৎসায় ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। এটি সংক্রমণের মূল শিকড়ে গিয়ে ফাঙ্গাস ধ্বংস করে এবং সংক্রমণকে প্রতিহত করে।  
   -মুল্য: ২০-৩০ গ্রাম টিউবের জন্য আনুমানিক ২০০-৩০০ টাকা।

3. ল্যামিসিল (Lamisil) - 1% টারবিনাফাইন।
   ল্যামিসিল হলো টারবিনাফাইন সমৃদ্ধ একটি মলম, যা ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি ত্বকের সংক্রমণ ধীরে ধীরে নিরাময় করে এবং ফাঙ্গাসের বিস্তার প্রতিহত করে।  
  -মুল্য: ১০-১৫ গ্রাম টিউবের জন্য আনুমানিক ৪০০-৬০০ টাকা।

4. ফ্যান্টাক্স (Funtax) - 1% ক্লোট্রিমাজল।
   ফান্ট্যাক্স মলমটি ক্লোট্রিমাজল উপাদান সমৃদ্ধ, যা ফাঙ্গাল সংক্রমণ বিশেষ করে দাউদ প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়। এটি ত্বকের লালচেভাব ও চুলকানি কমাতে সহায়ক।  
   -মুল্য: ১০-২০ গ্রাম টিউবের জন্য আনুমানিক ১২০-২০০ টাকা।

5. মিকোডার্ম (Micoderm) - 2% মিকোনাজল।
   মিকোনাজল সমৃদ্ধ মিকোডার্ম মলমটি ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশনের চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এটি দাউদ, রিংওয়ার্ম এবং অন্যান্য ফাঙ্গাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক।  
   -মুল্য: ১০-১৫ গ্রাম টিউবের জন্য আনুমানিক ১৮০-২৫০ টাকা।

6. ট্রেবিন (Trebin) - 1% টারবিনাফাইন।
   টারবিনাফাইন উপাদান সমৃদ্ধ ট্রেবিন মলমটি ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করে এবং সংক্রমণের দ্রুত নিরাময় নিশ্চিত করে। এটি দাউদ ও অন্যান্য ফাঙ্গাল ইনফেকশনের জন্য ব্যবহৃত হয়।  
  -মুল্য: ১০-১৫ গ্রাম টিউবের জন্য আনুমানিক ২৫০-৪০০ টাকা।

এই মলমগুলো ব্যবহারে সংক্রমণ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ব্যবহারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।


দাদ চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

দাদ বা দাউদ একটি সাধারণ ফাঙ্গাল সংক্রমণ, যা ত্বকে তীব্র চুলকানি ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ঘরোয়া উপায়ে দাদ চুলকানির চিকিৎসা খোঁজেন। অনেকেই দীর্ঘদিন থেকে দাদের সমস্যায় ভোগেন, যা ভীষণ ছোঁয়াচে এবং সহজে একজন থেকে অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।বর্তমানে ডাক্তার দেখিয়ে দামি ওষুধ খেয়ে এবং নিয়মিত মলম লাগিয়েও দাদমুক্ত হওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? আসুন দেখে নেই ঘরোয়া প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে দাদ দূর করার কিছু কার্যকরী উপায়:

নিম পাতা
নিম পাতা অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যযুক্ত। কিছু নিম পাতা পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান ধুয়ে ফেলুন বা পিষে সরাসরি লাগান।

রসুন
রসুনের অ্যালিসিন উপাদান ফাঙ্গাল সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কিছু রসুন পিষে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের চুলকানি কমাতে কার্যকর।

অ্যালোভেরা 
অ্যালোভেরার শীতল প্রভাব এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য দাদের চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

নারকেল তেল 
নারকেল তেলের লরিক অ্যাসিড ফাঙ্গাল সংক্রমণ দূর করতে সহায়ক। প্রতিদিন ২-৩ বার নারকেল তেল লাগাতে পারেন, যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করবে।

ব্রেকিং সোডা 
ব্রেকিং সোডার অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ ত্বকে দাদ থেকে মুক্তি দিতে পারে। এক চামচ বেকিং সোডা এবং পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে লাগান, ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

আপেল সিডার ভিনেগার 
আপেল সিডার ভিনেগারের অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য দাদ নিরাময়ে সহায়ক। পানি ও আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে দিনে কয়েকবার লাগাতে পারেন।

হলুদ
হলুদে থাকা কারকিউমিন উপাদান ফাঙ্গাল সংক্রমণ দূর করতে সহায়ক। হলুদ গুঁড়া ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে দাদের উপর লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।

দই
দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান দাদ নিরাময়ে সহায়ক। প্লেইন দই আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করুন এবং ৩০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।উপসংহারএই ঘরোয়া উপায়গুলো প্রয়োগ করে দাদ থেকে স্বস্তি পেতে পারেন। 

তবে, সমস্যা দীর্ঘমেয়াদী হলে একজন ডার্মাটোলজিস্ট বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক পরিচর্যা ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রেখে, আপনি ত্বকের ফাঙ্গাল সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং একটি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।