ব্যাংক লোন কেনো নিবো?
বিভিন্ন কারণে একজন উদ্যোক্তার ব্যাংক লোনের প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় ব্যবসায় এমন এক হাল হয়ে যায়। ওই সময়ে চাইলেও কারো কাছে অর্থ সাহায্য পাওয়া যায় না। স্বাভাবিক ভাবে তখন আমাদের প্রয়োজন হয় নতুন বিনিয়োগের। তখন আমাদের এক মাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ব্যাংক লোন।
আবার এমনও হতে পারে কেউ নতুন করে ব্যাবসা শুরু করতে যাচ্ছে কিন্তু বিনিয়োগের করানে তা শুরু করতে পাইতেছে না। তখন তাদের বিকল্প কোন রাস্তা খুঁজে না পেয়ে ব্যাংক লোনই নিতে হয়।
একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও ভালো ভাবে বুঝানো যাবে, ধরা যাক কোন উদ্যোক্তা মুরগির খামার দিতে ইচ্ছুক। তো তাকে খামার দেওযার আগে খামার দেওয়ার মতো উপযুক্ত জায়গা বিবেচনা করতে হবে। এর জন্য যা কিছু লাগবে তা ফিক্সড কষ্টের অন্তর্ভুক্ত। ধরা যাক মুরগির কামার দিতে তার ২ লাখ টাকা লাগলো। খামার দেওয়ার পর সেখানে সে ১০০ মুরগি তুললো। এখন মুরগি গুলো বিক্রি করার উপযোগী করতে ৮০ থেকে ৯০ দিন সময় লাগবে। ওই খামারি খামার শুরু করছে ২ লাক টাকা দিয়ে, এখন সে হিসাব করে দেখলো তার মুরগি গুলো বিক্র করার মতো করতে তার সব মিলায় খরচ যাবে ৩ লাখ টাকা। এখন সে বাকি ১ লাখ টাকা কই পাবে?
ওই সময়ে তার অতিরিক্ত টাকা টা কোথাও পাইতেছিলো না, এবং যা তার পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব ছিলো না। তার জন্য এর সহজ সমাধান হতে পারে ব্যাংক লোন।
একজন উদ্যোক্তার সততা এবং তার পরিশ্রমের কারনে ব্যবসায় লাভ এনে দেয়, আর তা দ্বারা তিনি সহজেই লোন পরিশোধ করতে পারবেন। পূর্বের উদাহরণ থেকে দেখা যায়, যদি উদ্যোক্তা ব্যাংক লোন নিয়ে তার সঠিক ব্যবহার করেন, তাহলে তার ব্যবসায় আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লাভ করা সম্ভব।
ব্যাংক থেকে লোন নিতে গেলে কি করতে হবে?
১.ব্যবসা নিবন্ধিত আছে কিনা:
আমারা ব্যাংক লোন নিতে চাইলে আমাদের সর্ব প্রথম প্রয়োজন ট্রেড লাইসেন্স। ট্রেড লাইসেন্স ছারা কোন উদ্যোক্তা লোন নিতে পারবে না। ট্রেড লাইসেন্সে উদ্যোক্তার নাম, ঠিকানা দেওয়া থাকে যেটা ব্যাংক তার প্রাথমিক পরিচয় হিসেবে গ্রহণ করে। কাউকে কোন কিছু ধার দেয়ার আগে যেমন আমরা তার সম্পর্কে খোজ খরব নেই, সে ভাবে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার আগে উদ্যোক্তার সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়ার নেওয়ার ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। তাই সর্ব প্রথম ব্যবসা নিবন্ধন করা প্রয়োজন। ট্রেড লাইসেন্স শুধু থাকলেই হবে না এটার প্রতি বছর নবায়ন ও করতে হবে।ঠিকানা যাচাইঃ
ব্যাংক যা করে তা হচ্ছে ব্যবসার সঠিক ঠিকানা, আসলেই ওই ব্যবসার ফিজিক্যাল আইডেন্টিটি সটিক আছে কিনা তা দেখে। এর জন্য ব্যাংক কোন ব্যবসার উদ্যোক্তা ও তার ভাড়াকৃত ভবনের মালিকের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তা দেখতে চায়। এটা শুধু মাত্র যারা ভাড়াকৃত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। কেউ যদি তার নিজের বা পারিবারিক সম্পত্তি ব্যবসার জন্য ব্যবহার করে তাহলে তার সেই জমির দলিল ব্যাংক লোন দেওয়ার আগে প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হয়।সঠিক ফিন্যান্সিয়াল ডকুমেন্ট আছে কিনাঃ
ব্যবসার ইনকাম ব্যাংক লোনের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট। ইনকাম হতে ব্যবসার আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ব্যাংক ধারণা পায়। স্বাভাবিক ভাবেই একটি লাভজনক ব্যবসাকে লোন দিতে ব্যাংকের আগ্রহ থাকে। তেমনি ব্যবসায় যদি লস হতে থাকে তাহলে ব্যাংক লোন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ৫ লাখ টাকার অধিক লোনের জন্য ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর প্রয়োজন। এছাড়াও বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর, যা ভ্যাট প্রদানের জন্য দরকার, তাও প্রয়োজনে ব্যাংক চাইতে পারে।কোন ব্যাংক থেকে সহজে লোন নেওয়া যায় বা কোন ব্যাংকে লোন নিলে ভালো হবে?
- সোনালী ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংক
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
- ব্র্যাক ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে লোক জন ভালো ভাবে জানেন না।ইসলামী ব্যাংক লোন প্রধাণেন ধরন অন্য সব ব্যাংকের থেকে আলাদ।এই জন্য ইসলামি ব্যাংকে লোন নিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।তা নিয়ে নিছে আলোচনা করা হলো
- ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।
- শাহ্জালাল ইসলামি ব্যাংক।
- আল আরাফাহ্ ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড।
- সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড।
- আইসিবি (ICB) ইসলামিক ব্যাংক।
- ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড।
ইসলামী ব্যাংকে যে ভাবে লোন নিবো
বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকের যে সমস্ত লোন সার্ভিস দেওয়া সেটা ব্যাংক লোন বলতে রাজি নয়।ইসলামী ব্যাংক এটাকে ইনভেস্টমেন্ট বলে থাকে।
সোনালি ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের বৃহত্তম একটি ব্যাংক । সোনালী ব্যাংকে বিভিন্ন ধরনের ঋণ দিয়ে করে থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ব্যক্তিগত ঋণ । সোনালী ব্যাংকের পার্সোনাল লোন একটি সহজ ও দ্রুত ঋণ প্রক্রিয়া। এই লোনটি বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পাড়ি সে গুলো,যেমন চিকিৎসা, শিক্ষা, ভ্রমণ, কেনাকাটা ইত্যাদি।
সোনালী ব্যাংক পার্সোনাল লোন ২০২৪
সোনালী ব্যাংকে ব্যক্তিগত ঋণের জন্য যা যা সুবিধা দিবে আমাদের তাহলো
- টাকার পরিমাণ: সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা
- মেয়াদ: সর্বোচ্চ ৮ বছরের
- সুদের হার: স্মাট + 2.50%
লোন গ্রহনে আমাদের যা যা কাগজ পাতি লাগবে :
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- আয় প্রমাণপত্র
- ঠিকানা প্রমাণপত্র
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
আমাদের দেশ থেকে প্রতিবছর অনেক মানুষ বিদেশ চলে যাইতেছে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য। তাদের মধ্যে অনেকের বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছে থাকলেও, টাকার অভাবে তারা তাদের সেই ছোট বড় ইচ্ছে পূরণ করতে পারেনা। প্রবাসীদের এই ইচ্ছে পূরণের জন্য প্রবাসী কল্যান ব্যাংক কাজ করছে
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে যা যা লাগবে
- আবেদনকারীর সর্বশেষ পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
- আবেদনকারীর ঠিকানা প্রমাণ (যেমন, বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি বিল)
- আবেদনকারীর আয়ের প্রমাণ (যেমন, বেতন সার্টিফিকেট)
- ঋণের প্রমাণ যেমন, ভিসা, ভর্তি কার্ড, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে তাদের সকল শর্ত মেনে, প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দিয়ে নিকটস্থ প্রবাসী কল্যান ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করতে হবে। ব্যাংকে গিয়ে ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
ব্র্যাক ব্যাংক
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যাংক গুলোর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক একটি। সবচেয়ে কম ইন্টারেস্টে এবং সবচেয়ে দ্রুত সময়ে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায় এ ব্যাংক হতেই। আজ আমরা ব্র্যাক ব্যাংক হতে কিভাব ব্যক্তিগত লোন পাওয়া যায় ইত্যাদি জানবো।
ব্র্যাক ব্যাংক থেকে লোন নিতে যা যা লাগবে
- ৩ কপি ছবি
- NID কার্ডের কপি
- ভিজিটিং কার্ড/ অফিস আইডি
- ই-টিন কপি
- ইউটিলিটি বিলের কপি
- গ্যারান্টরের ২ কপি ছবি
- গ্যারান্টরের NID কার্ডের কপি